বিশেষ ওয়েব
কায়রো: বিশ্ব সভ্যতায় নীল নদের নাম অপরিহার্য। আর ইজিপ্ট বা ঈজীপ্ট তথা মিসরের প্রাণ-ভ্রমোরাই তো বলা হয় নীল নদ’কে। যীশু খ্রিষ্টেরও জন্মের বহু আগে থেকেই নীল নদ অববাহিকায় যে আধুনিক সভ্যতা গড়ে উঠেছিল তা মিসরীয় সভ্যতা নামে পরিচিত। যার নিদর্শন স্বরূপ আজো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে ফারাঁও বা ফ্রাউন (ফেরাউন) সাম্রাজ্যের পিরামিড এবং স্ফিংস। পাঠকদের কাছে এদের নতুন করে পরিচয় করিয়ে দেবার প্রয়োজন নেই।
অতি সম্প্রতি সেই নীল নদের কাছেই আবিষ্কৃত হয়েছে আর এক প্রাচীন নগরের। প্রত্নতাত্ত্বিকেরা কিছু নমুনা পরীক্ষা করে ধারণা করছেন, নগরটি অন্তত ৭ হাজার বছরের পুরাণো। এতে রয়েছে বসতবাড়ি, সমাধিস্থল, মৃৎশিল্পসহ আরো কিছু প্রাচীন নিদর্শন। সঠিক বয়স নিরূপনের জন্য রেডিও-কার্বনসহ (কার্বন-১৪) অন্যান্য গবেষণা চলছে।
মিসরের একটি অন্যতম প্রাচীন এলাকা আবিদুস্। এখানে খোঁড়াখুঁড়ির কাজ করার সময় এ নগরের সন্ধান পান প্রত্নতত্ত্ববিদেরা। বিশেষজ্ঞরা সেখানকার ১৫টি সমাধিস্থল পর্যবেক্ষণ করে বলছেন, সেখানকার বাসিন্দাদের জীবন যাত্রার মান ছিল যথেষ্ট উন্নত। সমাধিগুলো বেশ পরিপাটি করে সাজানো গোছানো। সেখানে যাদের সমাহিত করা হয়েছে, তারাও খুবসম্ভব বেশ মর্যাদাশালী ছিল। এগুলো থেকেই প্রমান পাওয়া যায় যে, সে সময়ে সমাধি নির্মাতারাও বেশ নিপুণ ছিল।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ৭ হাজার বছর আগে যখন মিসরে প্রথম সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তখন এর রাজধানী ছিল আবিদুস। নতুন আবিষ্কৃত নগরটি সেই রাজধানির-ই অন্যতম অভিজাত এলাকা ছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এক বিবৃতিতে মিসরের প্রাচীন নিদর্শন বিষয়ক মন্ত্রণালয় বলছে, প্রথম সাম্রাজ্যের সময়কার যে ধরনের রাজকীয় সমাধিস্থল পাওয়া যায়, এবার আবিষ্কৃত সমাধিস্থলগুলো তার চেয়ে বড়। ফলে ধারণা করা হচ্ছে, অভিজাত এবং মর্যাদাশালী ব্যক্তিদেরই সেখানে সমাহিত করা হতো।
মিসরের অর্থনীতির অনেকাংশই পর্যটন নির্ভর। ২০১১ সাল থেকে শুরু হওয়া ধারাবাহিক রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিদেশি পর্যটকদের সংখ্যা ব্যাপকভাবে কুমেছে। সাম্প্রতিক এই প্রাচীন জনপদের আবিষ্কার দেশটির পর্যটন খাতকে আবারো চাঙ্গা করতে ভূমিকা রাখবে বলে সংশ্লিষ্ট সকলের ধারণা।